দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ কোনো কাজেই আসছে না। উল্টো স্বস্তির ব্রিজ এখন এলাকাবাসীর ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই বছর আগে লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের খুনিয়া ছড়ারপাড় নামক এলাকায় ওই ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রংপুরের অর্থায়নে রংপুর অঞ্চলে ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় ছড়ারপাড় এলাকায় ১৮ কোটি ১৪ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৭০ ব্যয়ে মাঝারি আকারে হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার (ফুট ব্রিজ) নির্মাণ করা হয়। ওই অর্থবছরের ২০ মার্চ ব্রিজের কাজ শেষ করে দুই পাশে (এপ্রোচ সড়ক) রাস্তা নির্মাণ না করলেও অজ্ঞাত কারণে নির্মাণ ব্যয় পরিশোধ করে বিএডিসি। কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছিলেন লালমনিরহাটের মেসার্স মুক্তি এন্টারপ্রাইজ। বিএডিসির লোকজন বার বার পরিদর্শন করলেও রাস্তা নির্মাণে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ফুট ব্রিজটির দক্ষিণ পার্শ্বে খুনিয়া ছড়া বার হাত কালির পাঠ এলাকা। উত্তর পার্শ্বে মেদুয়ারকুটি নামক এলাকা। কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল দুই এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। পায়ে হেঁটে ছাড়া বাইসাইকেল চালিয়েও ব্রিজের উপরে ওঠার উপায় নেই। ব্রিজটি যেন দুই গ্রামের মানুষকে বিভক্ত করে রেখেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা না থাকায় প্রায় দুই বছর ধরে ব্রিজটি তারা ব্যবহার করতে পারছেন না। পায়ে হেঁটে মানুষ চলাচল করতে পারলেও রিকশা, ভ্যানসহ কোনো যান বাহন পারাপার করা যায় না। বার বার রাস্তা নির্মাণের তাগিদ দিলেও আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রংপুর থেকে পরিদর্শন করা হলেও রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, “সরকার যাতায়াত ও অন্যান্য সুবিধার জন্য ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএডিসি যে ব্রিজটি তৈরি করেছে তার সুফল জনগণ পাচ্ছেন না। ব্রিজটি যথাস্থানে নির্মাণ করা হলেও দুই পাশে রাস্তা নির্মাণ না করায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষজন।
এলাকার বাসিন্দা সোলায়মান আলী সবুজ বলেন, ছড়ারপার এলাকার ব্রিজ দিয়ে পায়ে হেঁটে মানুষ চলাচল করতে পারলেও রিকশা, ভ্যান পার করা যায় না। উঠতি ফসল পারাপার নিয়ে বিড়ম্বনার কৃষকরা। ব্রিজটি গ্রামবাসীকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে।”
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন বলেন, “আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”